কিটোসিস/ Ketosis

রোগটি কি ?
কিটোসিস দুগ্ধবতী রোমন্থক প্রাণির কার্বোহাইড্রেট ও ভোলাটাইল ফ্যাটি এসিডের ত্রুটিপূর্ণ মেটাবলিজমের কারণে সৃষ্ট একটি বিপাকীয় রোগ। আক্রান্ত প্রাণির কিটোনেমিয়া, কিটোনইউরিয়া, হাইপোগ্লাইসেমিয়া ও যকৃতের স্লাইকোজেনের স্বল্পতা এ রোগের বায়োকেমিক্যাল বৈশিষ্ট্য। সাধারণত বাচ্চা প্রসবের কয়েকদিন হতে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এ রোগ দেখা যায়।
রোগের কারণ :
১. গাভীর খাদ্যে কার্বোহাইড্রেটের অভাব হলে কিটোসিস দেখা দেয়।
২. দুগ্ধবর্তী গাভীকে অনাহারে রাখলে বা প্রয়োজনের তুলনায় কম খাবার দিলে এ রোগ হয়।
৩. নিম্নমানের খাবার খাওয়ালে এ রোগ হয়।
৪. রুমেনের মাইক্রোফ্লোরার পরিবর্তন বা মারা গেলে।
৫. অতিরিক্ত ধকল এ রোগ সৃষ্টি করে।
রোগের লক্ষণ :
১. ক্রমশ ক্ষুদামন্দা ও দুধ উৎপাদন হ্রাস এ রোগের প্রধান লক্ষণ।
২. খাদ্য গ্রহণে অনিহা দেখা দেয়, স্বাস্থ্য ভেঙ্গে পড়ে ও প্রাণি অবসাদ গ্রস্থ হয়ে পড়ে।
৩. আক্রান্ত গাভীর শ্বাস-প্রশ্বাস, দুধ ও বাসস্থানের সর্বত্র এসিটোনের মিষ্টি গন্ধ পাওয়া যায়।
৪. লালা ঝরা, অস্বাভাবিক চর্বণ ও সব কিছু চাটা ইত্যাদি লক্ষণ প্রকাশ পায়।
৫. কাঁধ ও মধ্যভাগের মাংস পেশী কাঁপুনি দেখা যায় এবং গাভী ঠিকমতো সুস্থিত হতে পারে না।
চিকিৎসা :
চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে গ্লুকোজ বা ডেক্সট্রোজ সলুশন শিরায় ইনজেকশন করলে দ্রুত সুফল পাওয়া যায়। তাছাড়া গ্লুকোকটিকয়েড হরমোন এ রোগের চিকিৎসায় চমৎকার কাজ করে।
প্রতিরোধ :
১. গাভীর বাচ্চা প্রসবের পর ২ দিনের প্রথম অবস্থা পর্যন্ত কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাদ্য সরবরাহ করতে হবে।
২. বাচ্চা প্রসবকালীন সময়ে গাভী যাতে অনাহারে না থাকে তার ব্যবস্থা করতে হবে।
৩. বেঁধে পালা গাভীকে প্রতিদিন কিছু হাঁটাহাঁটির ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. দুগ্ধবর্তী গাভীর খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত কোবাল্ট ফসফরাস ও আয়োডিন থাকা প্রয়োজন।