যক্ষা / / Tuberculosis

যক্ষা কি ?
মাইকোব্যাকটেরিয়াম (Mycobacterium) গণযুক্ত কতিপয় রোগসৃষ্টিকারী জীবাণু দ্বারা পশুপাখির একটি দীর্ঘমেয়াদী সংক্রামক ব্যাধি হল যক্ষা।
প্রচলিত নাম :
ক্ষয় রোগ।
রোগের কারণ :
মাইকোব্যাকটেরিয়াম বভিস (Mycobacterium bovis) নামক এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া গরুর যক্ষা রোগের জন্য দায়ী ।
রোগের বর্ণনাঃ
যক্ষা রোগ ডেইরি খামারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশী জাতের গরু অপেক্ষা বিদেশী জাতের গরু এ রোগে বেশী সংবেদনশীল। আক্রান্ত প্রাণির ঘনিষ্ট সংস্পর্শে শ্বাস-প্রশ্বাসের সাহায্যে অথবা রোগের জীবাণু দ্বারা দূষিত পানি গ্রহণের মাধ্যমে সুস্থ প্রাণিতে এ রোগের জীবাণু সংক্রমিত হয়। সংগমের মাধ্যমে যোনিপথ বা মূত্রনালী দিয়ে এ রোগের জীবাণু সংক্রমিত হতে পারে। পশু হতে মানুষে এই রোগ সংক্রামিত হয় প্রধানত ঘনিষ্ট সংস্পর্শে বা আক্রান্ত প্রাণির কাঁচা দুধ বা ভালভাবে ফুটিয়ে না খাবার কারণে।
রোগের লক্ষণ :
১. যক্ষা রোগে আক্রান্ত প্রাণির শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে । দিন দিন শুকিয়ে যায়।
২. দেহের তাপমাত্রা হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে।
৩. আক্রান্ত প্রাণি অনিয়মিতভাবে খাদ্য গ্রহণ করে । নড়াচড়া কমে যায় এবং যথেস্ট নিয়ন্ত্রণ করা যায় ।
৪. প্রাণি ভেদে আক্রান্তের স্থানানুযায়ী যক্ষা রোগের লক্ষণ বিভিন্ন হয় । যেমন: পরিপাকতন্ত্রে যক্ষা হলে থেমে থেমে ডায়রিয়া, ফুসফুসে যক্ষা হলে কাশি, কোষ্ঠ-কাঠিন্য, ওলানে যক্ষা হলে ওলান ফুলে যায় ।
৫. চূড়ান্ত পর্যায়ে শরীর খুব শুকিয়ে যায় এবং প্রাণির শ্বাস কষ্ট খুব বেশী হয় ।
৬. যক্ষা রোগে আক্রান্ত পশুর দীর্ঘমেয়াদী উদরাময় হয় এবং অন্ত্রের প্রাচীর পুরু হয়ে ঢেউ তোলা টিনের ন্যায় ভাঁজ ভাঁজ (Corrugation) হয়ে যায়
৭. গাভীর ওলান আক্রান্ত হলে দুধের রং হলদে-সবুজাভ হয় ।
চিকিৎসা :
যক্ষা রোগে প্রায় ২৫ শতাংশ পশুতে প্রাণিতে কার্যকর হয় না। দুধের মাধ্যমে ঔষুধ বের হতে পারে এবং চিকিৎসা বন্ধ করলে পুনরায় রোগ সৃষ্টি হয়। তবে স্পেপটোমাইসিন / আইসোনিয়াজিড (Isoniazid) / রিফামপিসিন / আইসোনিকোটিনিক অ্যাসিড হাইড্রোজিন (INH) খুব কার্যকরী ঔষুধ হিসেবে পরিচিত।
প্রতিরোধ :
১. আক্রান্ত প্রাণিকে সনাক্ত করে পৃথক করা, খামারে রোগের জীবাণু না ছাড়ানো এবং বাইরে থেকে যাতে আক্রান্ত পশু খামারে যোগ না করা।
২. স্বাস্থ্য সম্মত পাল ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং প্রাণির খাদ্য ও পানির পাত্র প্রত্যহ পরিষ্কার করে গরম ৫% ফেনল বা ক্রেসল দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
৩. বাছুরকে যক্ষা রোগাক্রান্ত গাভীর দুধ খাওয়ানো যাবে না।